নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের গোলাপগঞ্জে বাদেপাশা ইউনিয়নের উত্তর আলমপুর লম্বাহাটি গ্রামের ৩৫ থেকে ৪০টি পরিবারের ইজমালী প্রায় দেড় থেকে ২শ বছর আগের পুরনো একমাত্র রাস্তার ওপর বাথরুমের ট্যাংকি নির্মাণ করে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ।
রাস্তা বন্ধ করার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবার মানববন্ধন সহ প্রশাসনের সযোগিতা কামনা করেন। মছকন আলী গত বছরের ২৯ নভেম্বর বিবাদী মিনহাজ উদ্দিন গংদের বিরুদ্ধে ক্যাম্প কমান্ডার গোলাপগঞ্জ আর্মি ক্যাম্প বরাবরে লিখিত আভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিপক্ষ উত্তর আলমপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে বাদেপাশা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন গংদের গোলাপগঞ্জ ক্যাম্পে ডেকে নিলে তারা বাথরুমের ট্যাংকি সরানো কথা দিয়ে লিখিত আপোষ মীমাংসায় স্বাক্ষর করেন।
মুচলেকায় ভুক্তভোগী গ্রামবাসির পক্ষে স্বাক্ষর করেন মছকন আলী, জাকির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, সফিক উদ্দিন, জইন উদ্দিন প্রমুখ। অভিযুক্তদের পক্ষে স্বাক্ষরকারী মিনহাজ উদ্দিন ও সাকের হাসান ট্যাংকি অপসারণ করে চলাচলের জন্য রাস্তাটি উন্মুক্ত করে দেয়ার অঙ্গিকার করেন।
লিখিত মুচলেকার ফটো সেনাবাহিনী তুলেন এবং এর এককপি ভুক্তভোগীদের প্রদান করেন। এর আগেও প্রতিপক্ষ গ্রাম্য সালিশনামায় রাস্তাটি ইজমালি জমি স্বীকার করে ৩০০ টাকার স্ট্যাপে মুচলেকা স্বাক্ষর দিয়ে আপোষ করেন।
উল্লেখ্য, সুচতুর প্রতিপক্ষ জয়নাল উদ্দিন বাদী হয়ে রাস্তাটি তাদের দখলে নিতে ৩ ডিসেম্বর আছকর আলী গংদের বিবাদী করে মাননীয় অতিরিক্তি জেলা হাকিম আদালত, সিলেটে মামলা দায়ের করেন।
বিবাদী জয়নাল উদ্দিন গং লিখিত মুচলেকা অমান্য করে গত ১১ ডিসেম্বর মামলা চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ৩য় কোন পক্ষ যাতে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বাথরুমের ট্যাংকি সরাতে না পারে সে বিষয়ে আদালতের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারি করেন। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। ফলে উক্ত রাস্তাটি এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এতে করে ৪০টি পরিবারের মানুষ সহ উক্ত রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী গ্রামের মানুষদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আদালতে নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাপগঞ্জ মডেল থানা এস.আই সুভাষ গত ২ সপ্তাহ আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গত ২ দিন আগের গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার গোলাপগঞ্জ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান মোল্লা ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই সুভাষ-কে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি জানান, খুব তাড়াতাড়ি আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বাদেপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন বলেন, বিষয়টি শুরু থেকেই আমি আপোষে মিমাংসার চেষ্টা করছি। এখনো সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ৬০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের পুরনো এ রাস্তাটি ওপর গত ২৬ নভেম্বর-২০২৪ইং সকালে প্রতিপক্ষ মিনহাজ উদ্দিন গংরা বাথরুমের ট্যাংকি নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ঘরবন্দী জীবনযাপন করছেন ৩৫-৪০টি পরিবারের লোকজন।
ভুক্তভোগীরা দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করে রাস্তাটি উদ্ধারের মাধ্যমে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।