গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিলটন চন্দ্র পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গোলাপগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফয়ছল মাহমুদ ফুয়াদের নেতৃত্বে ময়নাতদন্তের জন্য সানির লাশ কবর থেকে উত্তোলনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি গোলাপগঞ্জের রায়গড় গ্রামের কয়ছর আহমদ ও রুবিয়া বেগমের সন্তান সানি আহমদ (২২)।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিলেটে প্রাণ হারানোদের মধ্যে সানির লাশই প্রথম উত্তোলিত হচ্ছে। অপর নিহতের পরিবাবের সদস্যদের আপত্তির কারনে বাকিদের লাশ আপাতত উত্তোলিত হচ্ছেনা। তাই শুধুমাত্র সানির লাশ উত্তোলন করার হবে বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সানি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পরিদর্শক ইফতেখার আহমেদ বলেন, মামলা সঠিক তদন্তের জন্য ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। আদালতের আদেশ এবং নিহতের পরিবারের সম্মতির প্রেক্ষিতে লাশ উত্তোলনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশাকরি লাশ উত্তোলনের কাজটি সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হবে।
নিহত সানির মামা মো. আব্দুল মালিক বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে লাশ উত্তোলনের জন্য প্রশাসন সহ সকল স্থানে যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোথাও কোন সহযোগীতা পাইনি। এমনকি থানায়ও বারবার যোগাযোগ করার পরও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন প্রদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সানির শরীরে এখনোও বুলেট রয়েছে। তাই আমি চাই ময়নাতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের যেন শাস্তি হয়। সানির লাশ চুরি হওয়ার ভয়ে আমরা দীর্ঘদিন সানির কবর পর্যন্ত পাহাড়া দিয়েছি আমাদের গ্রামবাসিকে নিয়ে।
৪ আগস্ট গোলাপগঞ্জে একসাথে ছয় জন নিহত হন। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ওই দিন দুপুর ১টার দিকে গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ বাজার অদূরে ব্র্যাক পয়েন্টে আন্দালনরত ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায় পুলিশ ও বিজিবি। এসময় সানির গলা ও কোমরে গুলি লাগে।
সানি আহমদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় দু'টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। দু'টি মামলারই বাদি সানির বাবা কয়ছর আহমদ। একটি মামলা দায়ের হয় ২৭ আগস্ট। অপরটি আদালতের নির্দেশে দায়ের হয় ১১ সেপ্টেম্বর।
উল্লেখ্য যে, এজাহার অনুযায়ী, এ মামলায় ৪৫জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৪০জনকে আসামি করা হয়।এহাজারনামীয় আসামিদের মধ্যে গোলাপগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ রায় (৩৫ ), গোলাপগঞ্জ মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুল আমিন, ওসি তদন্ত সুমন চন্দ্র সরকার, শংকর নন্দী মজুমদারের নামও রয়েছে।
এ মামলার এজাহারনামীয় ২৭ নং আসামি লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জেবুল আহমদ ও জাহাঙ্গীর আলমসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্র : শ্যামল সিলেট