আলোচিত সিলেট ডেস্ক : সিলেটের গোলাপগঞ্জে পুলিশের সহযোগিতায় রাস্তা দখল করে বাথরুমের সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৪০টি পরিবারের লোকজনের চলাচল রুদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে আদালতে চলমান মামলার প্রতিবেদনে অর্থের বিনিময়ে উপস্থাপন করা হয়েছে মিথ্যা তথ্য।
সোমবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন গোলাপগঞ্জের উত্তর আলমপুর লম্বাহাটি গ্রামের জাকির হোসাইন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাকির বলেন, প্রায় ২০০ বছর পুরনো রাস্তার ওপর ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণ কাজ শুরু করেন গ্রামের জয়নাল উদ্দিন, মিনহাজ উদ্দিন, সাকের হাসান ও তাদের পক্ষের লোকজন। এতে রাস্তা দিয়ে গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবারের লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
এব্যাপারে ভুক্তভোগীরা ওই বছরের ২৭ নভেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেটের পুলিশ সুপার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ২৯ ডিসেম্বর গোলাপগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার ও ১ ডিসেম্বর গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বিষয়টি আপসে মিমাংসার জন্য দুই বার স্থানীয় উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহিদ উদ্দিন উদ্যোগ নিলেও জয়নাল উদ্দিন ও তার সহযোগীরা তাতে সাড়া দেয়নি। তবে পরে মিনহাজ উদ্দিন ও তার সহযোগীদেরকে গোলাপগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে ডাকা হলে তারা সেখানে উপস্থিত হয় এবং সেফটিক ট্যাংক ভেঙে রাস্তাটি চলাচলের জন্য খুলে দিতে সম্মত হন।
জাকির হোসাইন বলেন, রাস্তাটি দখলের লক্ষ্যে জয়নাল উদ্দিন আদালতে মামলা দায়ের করলে বিচারক বিষয়টি তদন্তের জন্য আদালত গোলাপগঞ্জ মডেল থানাকে নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জানুয়ারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই বিভাষ সিংহকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্তের পর সাংবাদিকরা ওসি মো. মনিরুজ্জামান মোল্লাকে প্রতিবেদনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান শিগগির আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। অথচ দেখা যায়, ২৩ জানুয়ারিই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, অর্থের বিনিময়ে প্রতিবেদন আগে তৈরি করা হয়। তদন্তটা ছিল শুধু লোক দেখানো। তাছাড়া প্রতিবেদনে যাদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে তারা সবাই জয়নাল উদ্দিনের পক্ষের লোক।
জাকির হোসাইন বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই বিভাষ তার প্রতিবেদনে রাস্তায় সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণের কথা উল্লেখ করেননি। বরং ওই রাস্তাকে জয়নালের বাড়ির উঠান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অথচ, পরপর লিখিত দুটি আপোসনামায় রাস্তা হিসেবে উল্লেখ এবং প্রমাণ রয়েছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জয়নাল উদ্দিন ও তার পক্ষের লোকজন সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছেন। আর তারা এটা করেছেন পুলিশেরই সহযোগিতায়। এএসআই বিভাষ বিশেষ সুবিধা ভোগ করে মামলার প্রতিবেদনে সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণের কথা গোপন করে বাড়ির উঠানসহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। আর এসব থেকে প্রমাণিত হয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তদন্তকারী কর্মকর্তা উভয়ে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
জাকির হোসাইন ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে বলেন, বিষয়টি পুনঃতদন্তের মাধ্যমে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। একই সাথে ঘরবন্দি লোকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে রাস্তাটি উদ্ধার এবং মিথ্যা প্রতিবেদনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।