বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা এলাকার গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় এ ঘটনা ঘটে। ওই অফিসের সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ ঝিটকা বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী সুব্রত সন্ন্যাসীর সঙ্গে এমন আচরণ করেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারকে গ্রাহক ‘ভাই’ বলে ডাকায় সেকেন্ড ম্যানেজার বলছেন, ‘ভাই’ বলেন কেন? গ্রাহক তখন বলেন, কেন ‘ভাই’ বলা যাবে না? সেকেন্ড ম্যানেজার বলেন, ‘ভাই’ বলা যাবে না, ‘ভাই’ বলবেন না। গ্রামীণ ব্যাংকের সবাইকে ‘স্যার’ বলতে হবে এটাই নিয়ম। এসময় গ্রাহক বলেন, কোথায় লেখা আছে আপনাদের ‘স্যার’ বলতে হবে, দেখান।
সেকেন্ড ম্যানেজার তখন আঙুল নাচাতে নাচাতে গ্রাহককে বলেন, আপনি এত বার্গেনিং করছেন কেন? গ্রাহক বলেন, আমি ভদ্রভাবে কথা বলছি। সেকেন্ড ম্যানেজার বলেন, আপনি ওনাকে (এক কর্মকর্তাকে দেখিয়ে) ‘ভাই’ বললেন কেন, আপনার কোন সম্পর্কের ভাই উনি? আপনি কথাবার্তা সাবধানে বলবেন। গ্রাহক তখন বলেন, আপনি নখ নাচিয়ে কথা বলবেন না। এসময় সেকেন্ড ম্যানেজারকে তার চেয়ার থেকে রাগান্বিতভাবে উঠতে দেখা যায়।
ভুক্তভোগী সুব্রত সন্ন্যাসী বলেন, “গতকাল দুপুরে টাকা ওঠাতে গ্রামীণ ব্যাংকে যাই। ব্যাংক কর্মকর্তা আমাকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রেখে বললেন, আগামীকাল আসার জন্য। তখন আমি ম্যানেজারকে বলি, ‘ভাই, কাল কখন আসবো?’ এটা বলার পরেই সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। আমাকে ‘ভাই’ বাদ দিয়ে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতে বলেন। তখন আমি তাকে কয়েকটা প্রশ্ন করলে তিনি আমার দিকে আঙুল তুলে কথা বলতে থাকে। আমাকে মারতে উদ্যত হয়ে ব্যাংক থেকে বের করে দেন।”
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনা আমি ভিডিও করার চেষ্টা করলে তিনি আমার মোবাইলটাও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুরো ঘটনা ম্যানেজারকে জানালে তিনিও এর কোনো প্রতিকার করেননি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, “উনি ‘স্যার’ বললে অসুবিধাটা কোথায়? এইটুকু কথা সহজভাবে নিলেই হয়। এটাকে নিয়ে যদি তিলকে তাল করে, তাহলে আমার কিছু করার নেই।”
ঝিটকা শাখার ম্যানেজার অদ্বৈত কুমার মৃধা বলেন, ‘স্যার’ বলার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রত্যেকটা অফিসের একটা প্রটোকল অনুযায়ী সবাই ওটা মেইনটেইন করে। তাদের দুজনের সঙ্গে আগের কোনো ঘটনার জেরে হয়তো এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। এটি নিয়ে সেকেন্ড ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ নিয়ে তিনি অনুতপ্ত।