কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি : পরিবেশের দোহাই দিয়ে যারা সিলেটের পাথর উত্তোলন বন্ধ করেছে তাঁরা বাংলাদেশের আদর্শ লালন করে না। তাঁরা ভারতীয় আদর্শ লালন করে ভারতের স্বার্থে পরিবেশের দোহাই দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ করেছে। দ্রুত সিলেট সহ সারা দেশের পাথর কোয়ারি খুলে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে ভোলাগঞ্জ দশনম্বর এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে পাথর কোয়ারি নিয়ে মতবিনিময় শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরোও বলেন, যেখানে দেশ ও জনগণের স্বার্থ রয়েছে সেখানে আমি নিজ উদ্যোগেই কাজ করি। আমার রাজনীতি দেশ ও জনগণের কল্যাণের জন্য। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে গিয়ে আমি পাথর কোয়ারি নিয়ে কথা বলেছি। তার কাছে উপস্থাপন করছি যে আমাদের দেশে পরিবেশের দোহাই দিয়ে যে পাথর উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে তার কোনো যুক্তি নেই। এটা ভারতের একটা পলিটিক্স। বরং আমাদের উপর ভারতের পচাঁ পাথর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। দেশের হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমাদের রিজার্ভে প্রভাব পড়ছে। কাজেই আমাদের কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করতে দিতে হবে। আওয়ামী গোলামী, পা চাটা সরকার ক্ষমতায় ছিল। আমি মনে করি শেখ হাসিনা আমাদের দেশের স্বাধীন প্রধানমন্ত্রী ছিলো না। সে ছিল ভারতের একটা মুখ্যমন্ত্রী। কাজেই আমি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো যেকোনো মূল্যে সকল অজুহাত বাদ দিয়ে মানুষদেরকে পাথর উত্তোলন করার ব্যবস্থা করে দেন এবং আমাদের দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধির ব্যাবস্থা করে দেন। যদি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে না দেন তাহলে আমরা সমস্ত শ্রমিক ও দেশবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন করবো। যে আন্দোলনের মুখে আপনারা পাথর উত্তোলন করার সুযোগ করে দিতে বাধ্য হবেন। আমাদের দেশের শ্রমিকরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় আত্মহত্যা করছে এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।
এসময় তিনি বলেন, এদেশে কিছু ভারতীয় দালাল আমলা আছে। তাঁরা চাই না এদেশের রাজস্ব বৃদ্ধি পাক এবং শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের মঙ্গল হোক। আওয়ামীলীগের সরকার আমলে ভারতীয় স্বার্থের কারণে পাথর কোয়ারির বন্ধ হয়েছিল। এখনও যারা পাথর কোয়ারির বিপক্ষে কথা বলে তাঁরা ভারতীয় দালাল। তাঁরা মূলত পাথর আমদানির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
দেশীয় পাথর কোয়ারি গুলো থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে ডলারের মাধ্যমে ভারত থেকে এলসি করে পাথর এনে দেশের রিজার্ভ কমানো কোনভাবেই যুক্তিক নয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের সকল পাথর কোয়ারি খুলে দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে বিষয়টি অবগতি করেছি। প্রয়োজনী হলে আবারও প্রধান উপদেষ্টা সহ সকল উপদেষ্টাদের কাছে পাথর সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের দুঃখেট কথা তুলে ধরে দ্রুত পাথর কোয়ারি খুলে দিতে উদ্যোগ নিবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট বিভাগীয় পাথর ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আব্দুল জলিল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জসিমুল ইসলাম (আঙ্গুর), প্রবীণ মুরব্বি হানিফ খন্দকার, পূর্ব ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম, ইসলামী আন্দোলন কোম্পানীগঞ্জ শাখার সভাপতি ইসমাইল আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আল মামুন, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান, ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল আজিজ, হোসেন নূর, মোকলেছুর রহমান, মতিউর রহমান, গোলাম কিবরিয়া, জয়নাল আবেদীন, খোর্শেদ আলম, বুরহান উদ্দিন সহ পাথর ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।