মুফিজুর স্বপন :
১.
অসংখ্য বিষাদের পর----আখগাছ পাতাডুবো জলে
আর আমাদের ভাতঘুম বোধ
করলা ফলের মতো মজ্জাগত ফলের সাথে অমিমাংসিত বচসার পরে
হাওয়াই জাহাজ আসে গ্রামের মানুষেরা জড়ো হয়
কেবলি নিয়ে যায় বোঝাই সুনা----ধান-যব-গমফল!
দীর্ঘ-দীর্ঘ নিশ্বাসে রাত ভারী হলে
কৃষক পুরুষ বন্দরে উপনীত ফসলের মমতায়
আশ্রয় নেয় অনুগত নারীর কাতর শরীরে ।
এই প্রেম, এই বন্ধনের দৃঢ়তায় পিচডালা শহরে
এখনো বৃষ্টি হয়-----পাখি আসে
আর তারা আখরোট, কাজোবাদাম, পিয়াজ কোষ হাতে নিয়ে
উজ্জ্বল গ্লাসে মদ ঢেলে ভাবে জিতে গেছি, বড় জিতে গেছি!
২.
শকুনের গতিবিধি সীমাবদ্ধ নির্দিষ্ট শূন্যতায়
কোন স্বর্গবাসে যাবে বলো?
দিনের শেষে সে নীড়ে ফিরে বংশানুক্রমে
নির্জনে শরীরী ভাষায় নিরত হও তুমি!
অসূচির দেহটাকে দায়মুক্ত করতে
স্নান শেষে যখন তুমি
ভিজা কেশ শুকাতে ছড়িয়ে দাও
আমার চকিত দৃষ্টি আলতো রোদ হয়ে
হামলে পড়ে তোমার অবিন্যস্ত চুলে।
আমি দেখতে যাই কোন স্বর্গবাসে আছ তুমি।
৩.
সাপে কাটার ঝুঁকি সত্ত্বেও আজন্ম আমি ছিলাম অরণ্যের মুগ্ধ বালক
বৈঠা জলের জীবীকার মতো কেবলি নিঃশেষে আশঙ্কা
অনুর্বর হাঁটা পথে অবিরাম মৃত্যুর হাতছানি
তবু মহাকালের সেই গম্ভীর জ্বরাপথে মৃত্যু আমাকে স্পর্শ করেনি।
আমি অন্ধকারের ও অনুগত দাস ছিলাম
বিজ্ঞাপনের কোলাহল মুখর এই ব্যস্ততম মহাজীবনে
একমাত্র অন্ধকারেই আমি তোমার দীর্ঘশ্বাস ঠের পেতাম।
অথচ সেই অন্ধকারই কিনা তোমার চুরি যাওয়া কুমারী দেহের সাক্ষী হলো!
৪.
ভাসমান বাষ্পের মতো এক গুপ্ত আততায়ী মানুষকে তাড়া করছে
আক্রোশে, চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের ভিতরে,
পায়ে ঠেলে বিনয় ও সমর্পণ।
যে নৈবিদ্যি আমরা তাকে উৎসর্গ করি তা কিন্তু যুদ্ধের উপঢৌকন হতে পারতো
সেই যখন হলোনা ভেবেছিলাম ফিরে যাবো
ঘূণাক্ষরে'ও শুধাবোনা
আমার শাশ্বুতি পথ হারিয়ে গেছে তোমার অতন্দ্র নির্মোকে!
সেই যদি ফিরে যেতে হয় আমি কি সু'বোধের মতো চলে যাবো?
হে পরাক্রমশালী উল্লেখিত ঈশ্বর-
তোমাকে আজ তালাক দিলাম, তালাক-তালাক-বাইন তালাক!