শনিবার (১১ মে) দুপুরে সিলেট নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ, আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লবিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ।
তিনি বলেন, ‘৮মে গোলাপগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নামে প্রহসন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই প্রহসনের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আহসান ইকবাল। সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করেন মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিমের কর্মী সমর্থকরা। উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বরায়া, হিলালপুর, হাজিপুর, মোল্লাগ্রাম ও কালিদাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আনারস ও ঘোড়া প্রতিকের অ্যাজেন্টদের বের করে দিয়ে দোয়াত কলম মার্কায় ব্যাপক জাল ভোট দেয়া হয়। এমনকি এসব কেন্দ্রে প্রিসাইডিং পোলিং অফিসাররাও জাল ভোট দিয়েছেন। মসজিদের ইমামকে দিয়েও দোয়াত-কলমের পক্ষে জাল ভোট দেয়ানো হয়েছে। এলিমের গুণ্ডাবাহিনী ভাদেশ্বর ইউনিয়নের শেখপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করতে গেলে প্রতিরোধের মুখে পড়ে। তারা ছোরা চাকু দা নিয়ে হামলা চালিয়ে আনারসের ৩জন কর্মীর উপর হামলা করলে তারা মারাত্মক আহত অবস্থায় এখনো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন বিকেল ৩টার দিকে ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কায়স্থগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে এলিম চৌধুরীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আনারস ও ঘোড়া প্রতিকের প্রার্থীকে অবরোধ করে রাখেন। এসময় তারা ওই কেন্দ্রসহ আশপাশ কেন্দ্রগুলোতে টেবিল কাস্ট করেছে। সকাল থেকে বারবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোলাপগঞ্জ থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আমাদের সহযোগিতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধের পরিবর্তে শেখপুরে মানুষের বাড়িবাড়ি গিয়ে হামলা করেছে। এতে ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে আর কেন্দ্রমুখি হননি। এমনকি ভোট গননায়ও ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। ঘোড়া ও আনারস প্রতীকের অনেক ভোট ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা কারণে বাতিল করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই একাট্টা হয়ে এলিম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছেন। তারা তাঁকে নির্বাচিত করার নীল নকশা প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করেছেন। স্কুলের শিক্ষক মসজিদের ইমামকে দিয়েও জাল ভোট দিয়ে আমার জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের নামে এমন প্রহসনে গোলাপগঞ্জবাসী হতবাক। জোরপূর্বক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’
এসময় তাঁরা গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, থানার ওসি ও লুৎফুর রহমান নামে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে নির্বাচন বাতিল করে পুননির্বাচনের দাবি জানান তাঁরা। এছাড়াও এ বিষয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।