বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করে উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে পূন: ভোটের দাবি জানিয়েছেন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রবাসী বিএনপি নেতা সেবুল মিয়া।
শুক্রবার বিকেলে পৌর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি তুলেন তিনি।
পাশাপাশি নির্বাচনে অনিয়ম, জালভোট ও কারচুপি করে প্রশাসন এক প্রার্থীর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন এ প্রার্থী।
সেবুল মিয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, সিলেটের অন্যান্য উপজেলার নির্বাচনের ফলাফল রাত ১০টার মধ্যে ঘোষণা করা হলেও রহস্যজনক কারনে বিশ্বনাথের নোয়ারাই সেন্টারে ভোটে গড়মিল করে ফলাফল আটকে রাখা হয়। অবশেষে রাত ১টায় নাটক সাজিয়ে প্রশাসন এক প্রার্থীর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করে। সাথে সাথে বিশ্বনাথের মানুষ প্রহসনের এই ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে উপজেলা সদরে এসে প্রতিবাদও জানিয়েছে। তিনিও ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তার নিকট ফলাফল বাতিল করে পূন:ভোটের লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
সেবুল মিয়া আরো অভিযোগ করেন, খাজাঞ্চি ইউনিয়নের চন্দ্রগ্রাম, কান্দিগ্রাম, নোয়ারাই, খাজাঞ্চি ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ ৬টি কেন্দ্রে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমার এজন্টদের বের করে দিয়ে নোয়ারাই ও কান্দিগ্রামে প্রিজাইটিং অফিসারকে ১ঘন্টা রুমে তালা দিয়ে আটকে রেখে টেবিল কাস্ট করা হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার সরকারি কলেজ, মিরেরচর-১, মিরেরচর-২, রামপাশা ইউনিয়নের আশুগঞ্জ বাজার সেন্টার, আল-আজম সেন্টার, দৌলতপুর ইউনিয়নের সিংরাওলী সেন্টারেও টেবিল কাস্ট করা হয়েছে। এবিষয়ে বার বার নির্বাচনের দিন আমি রির্টানিং কর্মকর্তাসহ প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু দু:খজনক বিষয় প্রশাসন কোন প্রদক্ষেপ নেয় নি। খাজাঞ্চি ইউনিয়নের সকল কেন্দ্রসহ অনিয়ম হওয়া সকল সেন্টারের ভোট বাতিল করে সেইসব কেন্দ্রগুলোতে পূন:ভোটের দাবি জানান তিনি।
তিনি বক্তব্যে আরো বলেন, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এই তিন পদের মোট রিজাল্ট শীট দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন কত অমিল রয়েছে। মোট ভোটার কাস্টিং তিন পদে এক থাকার কথা থাকলেও তিনটিতে তিন রকমের রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পর থেকে বিজয়ী প্রার্থী ও তার কর্মিরা আমার এজেন্টদের ও কর্মিসমর্থকদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, উপজেলা নির্বাচনে ১৩ হাজার ৩২২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ আনারস প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৬৮ ভোট। আর দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী প্রবাসী বিএনপি নেতা সেবুল মিয়া ১১ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন।
এদিকে, আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ভোট পুন:গননার আবেদন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম, রাহান আলী মনির, আব্দুল মালিক, প্রার্থীর বড় ভাই সেলিম মিয়া, তাজ উদ্দিন, আফিজ আলী মেম্বার, বিএনপি নেতা রমজান আলী, সিরাজুল ইসলাম, ছাব্বির আহমদ, মাসুম আহমদ, সনি আহমদ, আমির আলী, কামাল উদ্দিন, আব্দুর রউফ, রাসেল আহমদ প্রমুখ।