বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পৌর আওয়ামী লীগের দেয়া প্রতিবাদের পাল্টা জবাব দিলেন পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররা। বুধবার (২ আগস্ট) রাতে এক যুক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা পাল্টা এ প্রতিবাদ দেন।
তারা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিশ্বনাথ তথা সিলেটের সর্বাধিক জনপ্রিয় পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
তারা বলেন, বিশ্বনাথে দলমত নির্বিশেষে সকল মহলের কাছে গ্রহনযোগ্য বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এবং প্রথম পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা মেয়র মুহিবুর রহমানের সম্প্রতিক একটি বক্তব্যকে অপব্যাখ্যা করে বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগ যে বক্তব্য প্রদান করে তা দুর্নীতিবাজদের পক্ষালম্বন ছাড়া আর কিছু নয়। তারা মেয়রের বিরুদ্ধে যে মানহানীকর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তা শান্তি প্রিয় বিশ্বনাথবাসীকে দ্বিধাবিভক্ত ও সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের এসব উদ্ভট বক্তব্য প্রত্যাহার ও এমন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তারা।
তারা আরও উল্লেখ করেন, বিশ্বনাথ উপজেলার সম্প্রতি ইউনিয়ন নির্বাচনে ৫টি ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি নিয়ে মেয়রের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য। এই বক্তব্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিভাবে গেল তা আমাদের বোধগম্য নয়। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরণের বক্তব্য দেওয়া পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগকে দ্বিধাবিভক্ত করা ও উক্ত নেতৃবৃন্দের দেউলিয়াত্বের প্রমান। প্রকৃত পক্ষে মুহিবুর রহমান আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ। তিনি ১৯৮০ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ১৯৮০ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী ছিলেন। তার বিপরীতে সুফিয়ান চৌধুরীও প্রার্থী ছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সালে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৫-৭৬-এ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালে তৃণমূলের ভোটেও জয়লাভ করে কেন্দ্র থেকে নৌকার মনোনয়ন পান। তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সংগঠক হিসেবেও কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে বুকে লালন করেন বলেই ৫টি ইউনিয়নে নৌকার শোচনীয় পরাজয়ে নেতৃবৃন্দের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন এবং আওয়ামী লীগকে আগামীতে ঢেলে সাজানোর আহবান জানিয়েছেন। পৌর নির্বাচনে তার কাছে তথাকথিত নেতৃবৃন্দের ভূলেই ব্যক্তি মুহিবের কাছে নৌকার শোচনীয় পরাজয় ঘটে এবং এই তথাকথিত নেতৃবৃন্দের কারনে ইউনিয়ন নির্বাচনে ও নৌকার শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে।
তারা আরও বলেন, বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াছ আলীর শাসনামলে বিশ্বনাথে যখন আওয়ামী লীগ নাম কেউ নিতে সাহস পায়নি তখন এই মুহিবুর রহমানই মাঠে নেমেছিলেন এবং সিলেট জেলায় একমাত্র তিনিই ইলিয়াস আলীর অন্যায় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে মাঠে সোচ্চার ছিলেন। নিজেদের ভূল না শোধরিয়ে একজন জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে তাদের এই বক্তব্য শাক দিয়ে মাছ ঢাকা ছাড়া আর কিছুই নয়। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তথাকথিত নেতৃবৃন্দের এই বক্তব্য পক্ষান্তরে বিএনপি জামাত ও দূর্নীতিবাজদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বিএনপি জামায়াতের প্রেতাত্বা তথাকথিত নেতৃবৃন্দের হাত থেকে আওয়ামী লীগকে বাচাঁতে জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
বিবৃতিদাতারা হলেন, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং বিশ্বনাথ পৌরসভার প্যানেল মেয়র রফিক হাসান, উপজেলা শ্রমিক লীগের কার্যনির্বাহী সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, পৌরসভার কাউন্সিলর ফজর আলী, পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য কাউন্সিলর বারাম উদ্দিন, বিশ্বনাথ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর লাকী বেগম, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর রাসনা বেগম, কাউন্সিলর রাজুক মিয়া রাজ্জাক, সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিন।