রবিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কিসমত মাইজভাগ গ্রামের মৃত আব্দুর রব জুনু মিয়ার ছেলে কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন, ১৬ জুলাই আমার দোকানের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গেলে ইউনিয়নের সচিব নজরুল ইসলাম সরকার নির্ধারিত ৪০০ টাকার পরিবর্তে ৬৫০ টাকা ফি দাবি করেন। অতিরিক্ত টাকা দাবির কারণ জানতে চাইলে নজরুল ও কম্পিউটার অপারেটর সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। তারা চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খাঁনকে মোবাইলে কল দিলে তিনি এসে আমাকে মারধর শুরু করেন এবং বন্দী করে তিনজন মিলে আমার প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। এক পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হলে আমার স্বজনরা এসে চেয়ারম্যানের কবল থেকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরদিন কিছুটা সুস্থ হলে আমি সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলি আদালতে মামলা দায়ের করি (নং ২৭৩/২০২৩)। আমার দরখাস্তকে এজাহার হিসাবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। তারা দ্রুত এফআইআর রুজু করেন। শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হলে গণমাধ্যমে এ ঘটনা উঠে আসে এবং হানিফ চেয়ারম্যান, নজরুল এবং সাইফুলের কুকর্মের বিরুদ্ধে ইউনিয়নবাসী ফুঁসে উঠেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে হানিফ চেয়ারম্যান তার সিন্ডিকেট নিয়ে উঠেপড়ে লাগেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতি গোলাপগঞ্জ শাখার নেতৃবৃন্দকে ব্যবহার করেন। তাদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে আমার বিরুদ্ধে সচিব নজরুলকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে, যার কোন ভিত্তিই নেই। তেমন কিছু আমি করলে তারাতো আমাকে পুলিশে দিতে পারতেন।
শারীরিক নির্যাতন ও লাঞ্চনার কয়েকদিন পর কেন স্মারকলিপি দিবেন? এতেই প্রমাণ হয়, হানিফ চেয়ারম্যানকে রক্ষায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
মাসুদ বলেন, জন্মের দেড় মাসের মধ্যে নিবন্ধন করালে কোন ফি লাগেনা। অথচ এঘটনার আগে চেয়ারম্যান তার কাছের লোক শোভনের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে এখাতে দু’শো টাকা নিয়েছেন। আমার মা’র জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে গেলে ৫ হাজার টাকা দাবি করেছেন। হানিফ-নজরুল-সাইফুলরা এভাবে সহজসরল ফুলবাড়ি ইউনিয়নবাসীকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে তারা বাঁচতে চান। কিন্তু হানিফ চেয়ারম্যানের ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না। তার ভয়ে বর্তমানে আমি বাড়ি ছাড়া। আমার বিরুদ্ধে তিনি ভাড়া করা লোকজন নিয়ে মানববন্ধনও করিয়ে নানা কুৎসা রটনা করেছেন।
তিনি তার বিরুদ্ধে হানিফ চেয়ারম্যানের অপতৎপরতায় বিভ্রান্ত না হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি তাকে নির্যাতনের বিষয়টি তদন্ত করে ন্যায় বিচার ও হানিফ সিন্ডিকেটের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, সিলেট জেলা ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।