নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : নবীগঞ্জে জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গিয়ে বাড়ী ফেরা হলোনা কৃষক রফিক মিয়ার৷ পল্লীবিদ্যুৎ এর খুঁটির মাথা থেকে ঝুলন্ত কাঠ সহ তার কৃষকের উপরে পরে গিয়ে তারের সাথে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪ সন্তানের জনক কৃষক রফিক মিয়া (৫৫) এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের শ্রীধর পুর গ্রামের মৃত উসমান উল্লার পুত্র৷
স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা অনুমান ২টার দিকে কৃষক মো. রফিক মিয়া বাড়ির পাশ্ববর্তী (হাওরে) তার জমিতে ধানের চারা রোপণ করার সময় হঠাৎ পল্লী বিদ্যুৎ এর খুঁটির মাথা থেকে ঝুলন্ত কাঠ ও তার কৃষকের ওপর পরে গেলে তিনি বিদ্যুৎ এর তারের সাথে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই বিদ্যুতপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু রবণ করেন। এসময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে তারের সাথে জড়ানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ এর অভিযোগ কেন্দ্র ইনাতগঞ্জে বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবহিত করা হলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়৷ পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কৃষকের নিথর দেহ বাড়ীতে নিয়ে আসেন৷ খবর পেয়ে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ সহ একদল পুলিশ লাশটি পুলিশ হেফাজতে থানায় নিয়ে যান৷
এদিকে এ ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের এ,জি,এম (এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা একটি দূর্ঘটনা ও দু:খজনক সংবাদ। আমরা সরেজমিনে তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব৷
এঘটনায় কৃষকের গ্রামের বাসিন্দা, বিশিষ্ট আইনজীবী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মুজিবুর রহমান কাজল বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও শোক সন্তপ্ত পরিবার বর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপণ করছি। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আরও সচেতনতা অবলম্বন করবেন ও সদ্য প্রয়াত কৃষক পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ৷
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: ছালিক মিয়া বলেন, প্রবীণ এই কৃষকের বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপণ করছি। তিনি অত্যন্ত একজন ভালো মানুষ ছিলেন৷ কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন৷
এদিকে জমিতে ধান চারা রোপণ করতে গিয়ে কৃষকের এ মৃত্যুকে গ্রামবাসী দূর্ঘটনা মানতে নারাজ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন জরাজীর্ণ কাঠের বিষয়টি এর আগেও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ ঘটনাটি ঘটেছে৷
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের এজি এম৷ অপরদিকে কৃষক রফিক মিয়ার মৃত্যুতে তার পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷